ফিকশন লেখায় ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব ১: চরিত্রকে নিজের করে তোলা

Kyle’s avatar
এই প্রবন্ধটি নিজের থেকে AI দ্বারা অনুবাদ করা হয়েছিল। অনুবাদে ভুল বা অসাধারণ বাক্যাংশ থাকতে পারে। আসল ইংরেজি সংস্করণটি এখানে পাওয়া যাবে।

আপনি যদি একজন সৃজনশীল লেখক হয়ে থাকেন এবং 16Personalities ব্যবহার করেন নিজেকে, আপনার বন্ধু, প্রিয়জন, সহপাঠী কিংবা সহকর্মীদের আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য, তাহলে নিশ্চয়ই মাঝেমধ্যে ভাবেন, “এই ধারণাগুলো কি আমি আমার লেখাতেও প্রয়োগ করতে পারি?”

যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে আরও পড়তে থাকুন – এই লেখা ঠিক আপনার জন্য! ছয় পর্বের এ সিরিজে, “ফিকশন লেখায় ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব”-এ আমরা দেখব কিভাবে আমাদের ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব ফিকশনের চরিত্রগুলোতে প্রয়োগ করা যায়, কোথায় সুযোগ আছে, কোথায় সীমাবদ্ধতা—গভীর, বিশ্বাসযোগ্য চরিত্র গঠনের বুনিয়াদ থেকে শুরু করে তাদের প্রেরণা বোঝা, জটিল খলনায়ক সৃষ্টি—সবই থাকছে এখানে।

প্রথমেই দেখা যাক: কীভাবে একজন ফিকশনাল চরিত্র মনে গেঁথে যায়, আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে?

কেন চরিত্র পাঠকদের মুগ্ধ করে

লিখিত ফিকশন আমাদের নিয়ে যায় অন্য কোনো দুনিয়ায়, গল্পের চরিত্রদের হাঁটাপথে আমরা ভাগ নিই, সঙ্গে থাকি তাদের ভাবনায়-অনুভূতিতে। ফিকশন আমাদের হৃদয় ও মনে গিয়ে পৌঁছায়—আমাদের নিজের মূল্যবোধ, অভিজ্ঞতা ও স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটিয়ে; সেই সঙ্গে আমাদের, পরিচিত কল্পনা কিংবা ধ্যানধারণা নিয়ে আনন্দিতও করে।

তবে ঠিক উল্টো দিক থেকেও ফিকশন একইভাবে আকর্ষণীয়—এটা আমাদের পরিচিতের বাইরে নিয়ে যায়, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি শেখায়, এমন সব উত্তেজনা নিয়ে আসে, যা হয়তো আমাদের নিজ জীবনে নেই। এই দিকগুলোও দারুণ—তারপরও আমরা বিশ্বখ্যাত কোনো লেখকের মূলধারার কাজ পড়ি কিংবা নিজেদের কল্পনাশক্তির কথা কাগজে তুলে ধরি।

একটি আকর্ষণীয় ফিকশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো—এমন চরিত্র, যাদের সঙ্গে পাঠক সংযোগ গড়তে পারেন, যাদের নিয়ে ভাবতে পারেন। কখনও মনে হতে পারে, চরিত্রের গুরুত্ব কাহিনির চেয়ে কম, কিন্তু চিন্তা করুন—চলচ্চিত্র ফিকশনের কথা। কেন অভিনেতারা এত সময় দেন তাদের শরীরী ভাষা, মুখাবয়ব ও কণ্ঠস্বরে? কারণ, এভাবেই তারা দর্শকদের টেনে নেন চমৎকারভাবে।

লিখিত ফিকশনে সাধারণত এসব দৃষ্টিগ্রাহ্য তথ্য এতটা স্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয় না, বরং পাঠক নিজস্ব কল্পনায় চরিত্রগুলোকে রং করতে পারেন, নিজের মতো করে গড়ে তুলতে পারেন। প্রত্যেক পাঠকের নিজের আলাদা কল্পনাজগৎ থাকে, আর এটাই এক অর্থে জাদুময়।

চরিত্রের ধারাবাহিকতা কেন জরুরি

পাঠকের কল্পনাশক্তি লেখকদের থেকে কিছুটা দায়ভার কমায়—চরিত্রের প্রতিটি খুঁটিনাটি লেখার ব্যাপারটি কমে আসে, তবে সেইসঙ্গে সুযোগও বাড়ে, কিছু দায়িত্বও। চরিত্রগুলো পড়কের কল্পনাকে আরও উসকে দিতে হবে, দমন নয়। লেখক চাইলে নিজের দর্শন ফুটিয়ে তুলতে পারেন, তবে সেটাতে যেন পাঠক আঁটকে না যান—বরং তারা চরিত্রের ভাবনায় নিজেদের সহজেই মেলাতে পারেন।

কাহিনি কিংবা পরিবেশ যাই হোক, চরিত্রই লেখকের সেই বাহন, যার মাধ্যমে মানব আচরণ ও অভিজ্ঞতা পাঠকের কাছে পৌঁছায়। আপনি পাঠকের মনে ভয়, শ্রদ্ধা, সহানুভূতি, আতঙ্ক কিংবা উত্তেজনা জাগাতে চাইলে—চরিত্রই হয়ে ওঠে পাঠকের মানবিকতার এক বিস্তার, যেন তাদের মন ও দেহের একটা অংশ গল্প জগতে ঢুকে পড়েছে। চরিত্র যেন হয়ে ওঠে পাঠকের সংবেদী অঙ্গ, যার মাধ্যমে সে অনুভব করতে পারে চরিত্র কী অনুভব করছে, তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায়।

এই একাত্মতা সহজ হয় যখন ফিকশনের চরিত্র ধারাবাহিক—এরা যদি এলোমেলোভাবে আচরণ করে, পাঠকের সংযোগ করা কঠিন হয়, কারণ এমন আচরণ তাদের নিজেরই মনে হয় না। চরিত্র যদি কেবল বাইরের ঘটনার শিকার হয়, কিন্তু তাদের নিজস্ব, বাস্তবসম্মত আবেগ-প্রেরণা না থাকে—তাহলে সেই চরিত্র অনুজ্জ্বল, নিশ্চিহ্ন, ব্যক্তিত্বহীন মনে হতে পারে। শক্তিশালী চরিত্রের থাকে নিজের নিয়ম, সেই নিয়ম হুট করে ভাঙলে পাঠক হয় বিভ্রান্ত—গল্প থেকে অনেকেই ছিটকে পড়েন।

বাস্তবসম্মত একটি ব্যবস্থা

গভীর চরিত্রগুলো যেমন গল্পকে টানটান করে তোলে, তার চেয়েও বড় কথা—তারা লেখককে নতুন কিছু সৃষ্টি করতেও সাহায্য করে। ধরুন, ফিকশনের চরিত্র ও তাদের মিথস্ক্রিয়া যেন একটি যান্ত্রিক সমস্যার গাড়ি—এই অনুভুতি অনেক লেখকের চেনা। যেমন, দক্ষ মিস্ত্রি কোনো অংশ বদলে গাড়িটাকে সচল করে রাখে। কিন্তু প্রকৌশলীর থাকেই গাড়ির নকশার গভীর জ্ঞান, ফলে সে অগ্রিম অনুমান করতে পারে, চাইলে তার কার্যক্ষমতাও বদলে দিতে পারে। ঠিক তেমনিভাবে, লেখক যদি চরিত্রের ব্যক্তিত্ব নিয়ে বিশদ ধারণা রাখেন—তাহলে তিনি শুধু বিশ্বাসযোগ্য নয়, জটিল গল্পও তৈরি করতে পারবেন; কারণ তিনি জানবেন, কোনো চরিত্রের জানা উপাদানগুলো কোনো পরিবেশে বা অন্য চরিত্রের সঙ্গে মিললে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে।

চরিত্র বিশদভাবে গড়ে তুলতে চাওয়া মানেই লেখকের হাতে সব সরঞ্জাম চলে এল এমন নয়, তবে নানা প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন তারা। উদাহরণ হিসেবে, কিছু মধ্যযুগীয় ফ্যান্টাসি লেখক চরিত্র নির্মাণে Dungeons & Dragons-এর নিয়ম ব্যবহার করেন। এই পদ্ধতি ঐ ধারার জন্য উপযোগী হলেও, ব্যক্তিত্বের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিয়ে কোনো দিকনির্দেশনা দেয় না; সুতরাং এসব লেখককে সে জায়গাগুলো নিজেদের মতোই ভাবতে হয়।

এখানে পার্সোনালিটি টাইপ তত্ত্ব যেন উজ্জ্বল বর্মে ঘোড়া চড়া এক বীর; প্রাণহীন, অসহায় ভাবমুর্তি, নিস্পৃহ নৈতিক নায়ক কিংবা একঘেয়ে শত্রুর হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করে আনে। গবেষণাভিত্তিক এই পার্সোনালিটি টাইপ তত্ত্ব লেখকদের জন্য চরিত্রকে সংজ্ঞায়িত, বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করতে এক অসাধারণ সহায়ক ব্যবস্থা। এটা কোনোভাবে সৃজনশীলতাকে সীমাবদ্ধ না করে বরং নতুন নতুন সম্ভাবনা খুলে দেয়—এ নিয়ে পরে আরও বলব।

ফিকশন লেখকের ভাবনাজগতে অনেক কিছু ঘুরে বেড়ায়: পরিবেশ, কাহিনি, চরিত্র, গতি ইত্যাদি। পার্সোনালিটি টাইপ তত্ত্ব সৃজনশীলতাকে সহায়ক নির্দেশনা দিতে পারে, লেখকের হাতকে প্রয়োজনের বাইরে縛ে রাখে না; কারণ পার্সোনালিটি টাইপ মূলত বাস্তব মানুষদের অসংখ্য সূক্ষ্ম বৈশিষ্ট্যের ব্যাপক রূপ। তবে এটি চরিত্রের আচরণের পেছনের বাস্তবসম্মত কারণ দেখাতে লেখককে সাহায্য করে, অনেক সময় অবাক করা মাত্রায়।

আমাদের ১৬টি পার্সোনালিটি টাইপ ও Identity বৈশিষ্ট্যগুলোকে চরিত্র সৃষ্টির মৌলিক কাঠামো হিসেবে ব্যবহার করলে লেখকদের জন্য বিশাল সুবিধা—পুরোটাই কল্পনা করে নিতে হয় না। প্রতিটি পার্সোনালিটি টাইপ, যত বিস্তৃতই হোক, সাধারণ কিছু আচরণ দেখায়, যার ফলে চরিত্র ও তার আশপাশের জগত, অন্যান্য চরিত্র এমনকি নিজের সঙ্গেও তাদের মিথস্ক্রিয়া প্রকৃতির কাছাকাছি হয়। টাইপ তত্ত্ব লেখককে বিভিন্ন পার্সোনালিটি টাইপের সাধারণ জীবনপথের—ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পেশাগত—স্বাদও দিতে পারে, যেখান থেকে বাস্তবধর্মী কাহিনি সৃষ্টির অনুপ্রেরণাও পাওয়া যায়।

আমাদের ওয়েবসাইটে কোনো পার্সোনালিটি টাইপ সম্পর্কে পড়লে অনেকেই ভাবে, “এই মানুষটাকে আমি চিনি!” কিংবা “অভি, এটা তো একদম আমার মতো!” যখন লেখক সচেতনভাবে চরিত্র নির্মাণে পার্সোনালিটি টাইপ মাথায় রাখেন, তখন পাঠকেরও মনে হয় চরিত্রটা সত্যিকারের মানুষের মতো—এটাই লেখার সবচেয়ে বড় সার্থকতা।

আরও পড়ুন

আমাদের ফিকশন লেখার সিরিজের বাকিগুলো পড়ে দেখুন:

ফিকশন লেখায় ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব ২: টাইপ তত্ত্বের প্রয়োগ

ফিকশন লেখায় ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব ৩: সীমারেখা ও নিয়ম ভাঙার গল্প

ফিকশন লেখায় ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব ৪: অশুভতার গভীরে – “খারাপ চরিত্র”

ফিকশন লেখায় ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব ৫: পাঠকের পার্সোনালিটি টাইপকে মাথায় রেখে লেখা

ফিকশন লেখায় ব্যক্তিত্ব তত্ত্ব ৬: পাঠকপ্রিয়তা বাড়ানোর উপায়